একটি বই লেখাই কাল হলো বহুমাত্রিক লেখকের!

‘‌‌পাক সার জমিন সাদ বাদ’ বইটি লেখার জন্যই অধ্যাপক হুমায়ূন আজাদকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল, বইটি প্রকাশের কারণে আমাকেও হত্যার চিঠি দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা’ বলেন আগামী প্রকাশনীর মালিক ওসমান গণি। এ হত্যা মামলায় গতকাল ১৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ঢাকার চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ এএইচএম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়ার আদালতে সাক্ষ্যদানকালে এ কথা বলেন তিনি।
ওসমান গণি তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, হুমায়ূন আজাদের ওপর কারা হামলা করেছে তা বের হবে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে জিজ্ঞাসা করলে, এ কথা হুমায়ূন আজাদ তার জীবদ্দশায় বহুবার বলেছিলেন। ওসমান গণি আরও উল্লেখ করেন, সাঈদী ২০০৪ সালে সংসদ সদস্য থাকার কারণে হামলার বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ফজলুল করিম তাকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করতে পরেননি।
ওসমান গণি তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বইমেলায় আগামী প্রকাশনীর স্টলে ‘পাক পাক সার জমিন সাদ বাদ’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন হুমায়ূন আজাদ। এরপর মেলায় লেখক চত্বরে কিছুক্ষণ আড্ডা দেন। মেলা থেকে বের হলে দুর্বৃত্তরা তাকে হামলা করে। বই দিয়ে দুর্বৃত্তদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
ওসমান তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, ‘২০০৪ সালের একুশে বইমেলায় তার প্রকাশন থেকে পাক সার জমিন সাদ বাদসহ চারটি বই বের হয়। এর আগে ওই বইটি যখন ইত্তেফাকে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় তখন থেকেই মৌলবাদী গোষ্ঠী লেখার বিরোধিতা করে আসছিল। ওসমান আদালতকে বলেন, ‘২০০৪ সালে পাক সার জমিন সাদ বাদ বইটি প্রকাশের পর মৌলবাদীরা আমাকেও হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি দেয়। ২০০৫ সালে তারা আমাকে টেলিফোনে হুমকি দিয়ে বলে, হুমায়ুন আজাদকে যারা হত্যা করেছে তারাই তোকে মেরে ফেলবে।’
ওসমান আরও উল্লেখ করেন, হমায়ুন আজাদকে হত্যা চেষ্টার পর তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ব্যাংককে পাঠানো হয়। সেখানে প্রায় এক বছর চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন। পরে জার্মনিতে যান পেন ইন্টারন্যাশনালের আমন্ত্রণে জার্মান কবি হেনরিক হাইনের ওপর গবেষণার জন্য। সাত দিনের মাথায় হুমায়ূন আজাদকে মিউনিখে তার ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

Leave a comment

Filed under Bangladesh

Leave a comment